আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন বিটিভিতে আলিফ লায়লা প্রচারিত হতো। আলিফ লাইলায় দেখতাম, সিনবাদ কে পরাজিত করতে বিভিন্ন অপশক্তি নানা ভাবে নানা কুকৌশল অবলম্বন করে তাকে অপদস্ত করার চেষ্টা করতো।মনে হতো এই বুঝি অপশক্তিরা জিতে যাচ্ছে, কিন্তু না দিনশেষে সিনবাদেরই জয় হতো। এই জয়ের কারন কি জানেন, কারন হচ্ছে তার ভিতরে থাকা ন্যায় ,সততা ও বিশ্বাস।
আলিফ লায়লা আরব্য রজনীর গল্প কাহিনী বা উপকথা হলেও তার ভেতরে থাকা ন্যায় ,সততা ও বিশ্বাসের যে দর্শন সেখানে দেখানো হতো তা কিন্তু কোন গল্প কাহিনী নয়। তা আমাদের জীবনে সুপেয় জলের মতোই প্রয়োজনীয়।
সেইরূপ আমাদের সমাজে ইউনুস এর মত কিছু মেডুসা নামক অপশক্তি আছে যারা সর্বদা এই দেশকে পেছন থেকে টেনে ধরতে চায়। বিভিন্ন অপকৌশল প্রয়োগ করে, রুদ্ধ করে দিতে চায় সকল সত্য ও ন্যায়ের রথকে। অথচ জয় কিন্তু দিন শেষে তারই হয় যে ন্যায়,সততা ও বিশ্বাস কে লালন করে।তেমনি আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা ন্যায়,সততা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক।অপশক্তি যতবেশি শক্তিশালীই হোক না কেন কখনোই স্রষ্টা ও প্রকৃতির চেয়ে বেশি শক্তিশালী নয়।পদ্মা সেতুর মত এমন একটি মহৎ কাজের জন্য প্রকৃতির প্রতিটি বিন্দু থেকে প্রতিবিন্দু পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে সাহস শক্তি ও সাপোর্ট দিয়েছে। সেই সাথে পরাজিত হয়েছে সকল মেডুসা ওরফে ইউনুস বাহিনী।মেডুসার এক অভিন্ন প্রদর্শনী বা ক্যারেক্টার হচ্ছে এই মোহাম্মদ ইউনুস।
এই মেডুসা বাহিনীর দেওয়া সকল অপচালই আমাদের উপর তা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এই মুখ ফিরিয়ে নেওয়াকে আমাদের সক্ষমতা প্রমানের একটি বিশাল সুযোগ বলে মনে হয়েছে, আর তার প্রমান হচ্ছে আজকের এই পদ্মা সেতু।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্পল পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচুর আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তার এই আনন্দ প্রকাশ বা পাশে থাকা মূলক বক্তব্যটি আমাদের দৈন্দিন জীবনের এক গভীর দর্শনেরই প্রতিফন মাত্র।
একটু গভীরভাবে খেয়াল করলে দেখবেন, আপনার জীবনের সব চেয়ে পঙ্কিল সময় যখন আপনি অতিক্রম করেছেন ,তখন হাতে গোনা দুই একজন সারথি ব্যতীত তেমন কাউকে আপনি পাশে পাননি।বরং আপনাকে আঁচড়ে ধরার পাল্লাটাই ছিল বেশি ভারী।যখন আপনি সকল পঙ্কিলতা অতিক্রম করে একজন সফল মানুষ হয়ে উঠবেন, তখন দেখবেন আপনাকে এক সময় যারা টেনে ধরেছিল,অথবা আপনার পাশে না থাকা মানুষগুলোই আপনার সবচেয়ে আপন আর কাছের হয়ে উঠতে চাইবে। আপনার সাফল্যের অংশীদার হতে চাইবে।
তেমনি আজ বিশ্বব্যাংকের অবস্থাও তাই দাড়িয়েছে।সবাই সফলতার সাথে থাকতে চায়,অংশ হতে চায়, কিন্তু সেই সফলতা নামক গল্পটা যে কত বঙ্কিম পথ অতিক্রম করে এই সফলকাম অবস্থায় এসে পৌছেয় সে দূর্গম পথে কেউ পথপান্থ বা পথসঙ্গী হয় না, হতে চায় না। শুধুমাত্র দুই একজন আত্মার মানুষ ছাড়া।
সফলতা শুধুমাত্র একটি শব্দ নয় একটি দীর্ঘ ধৈর্য ও সাহস এর যাত্রারথ।যে পথ অতি বিচক্ষণ ভাবে পাড়ি দিতে হয়। যা আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দিয়ে তার প্রমাণ করেছেন।
আজ পদ্মা সেতু নামক গল্পটা সফল।আজ বিশ্বব্যাংক সেই সফলতার অংশ হতে এসেছে। ভাগ বসাতে এসেছে আমাদের পদ্মা সেতু নামক সফল উপাখ্যানে। আমরাও বিশ্বাস করি আনন্দ ভাগ করলে আনন্দ বাড়ে।
যখন বিভিন্ন কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় সকল সহায়তার হাত রুদ্ধ হয়ে গেল তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা নিজের যেটুকু আছে সেটুকু দিয়েই নির্মাণ করলেন নজরুলের বিদ্রোহী কাব্যের মত এক মহা কাব্য যার নাম এই পদ্মা সেতু।যা বিশ্বের নিথর বিবেককে নাড়িয়ে দেয়ার মত শক্তি ধারণ করে।যা বিশ্বের ঘুমন্ত মোড়লদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমরা পারি, আমরা সক্ষম এবং আমাদের সেই পদ্মা সেতু নামক বিদ্রোহী কাব্যের রচয়িতা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
তাই বাংলার জনগণ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে বীরকন্যা জোয়ান অব আর্কের সাথে তুলনা করে সম্মিলিত স্বরে বলতেই পারে,,
বল বীর –
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
অতঃপর এখন সুসময়ে সব সুকৌশলীর দল পদ্মা সেতু নামক অমর কাব্যে ভাগ বসাতে চায় আর মূর্খরা সব জ্বলে। মানুষের হৃদয়ে ঈর্ষা বা জ্বালা আসে অজ্ঞতা থেকে জ্ঞানের স্বল্পতা থেকে।
ঈর্ষা বা জ্বালা অজ্ঞতারই এক বহিঃপ্রকাশ।