ঈদে মুক্তি প্রাপ্ত চার ছবির মধ্যে তিনটি দেশের সিনেমা হলগুলোতে দেদারসে চলছে। দর্শকের হলমুখি হওয়ার সেই জোয়ার নিয়ে সরগরম ফেসবুক ও ইউটিউবও। হলে হলে লম্বা লাইন, ভিড়ভাট্টা সবকিছুই দেখা যাচ্ছে।
বিশেষ করে গলুই, বিদ্রোহী ও শান ছবিগুলো দেখতে আবার যে দর্শক হলমুখি হয়েছে সেই প্রমাণ মিলেছে গত ৫ দিনে। সিনেমা হল মালিক সমিতি, স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গেল।
চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য এই ঈদে দর্শকদের হলমুখি হওয়ার বিষয়টি ‘সিনেমা ঘুরে দাঁড়ানোর গ্রিন সিগন্যাল’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে সিনেমার সুদিনে আবার প্রবেশ করা যাবে। নইলে দর্শক ভারতীয় দক্ষিণী ছবি কিংবা ওটিটিতে বুঁদ হতে থাকবে।
বছরজুড়ে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সে হলিউডের ছবির দর্শক বেশি থাকে। তবে এই ঈদে বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ), সীমান্ত সম্ভার (ধানমন্ডি) ও সনি (মিরপুর) শাখাগুলোতে গলুই ও শান দুটি ছবি প্রদর্শনের পর ভিন্ন চিত্র দেখছে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মেজবাহ আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সিনেপ্লেক্সের তিনটি শাখাতে ‘গলুই’ ও ‘শান’ দুটি ছবি খুব ভালো চলছে। দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছবি দুটি উপভোগ করছেন।
তিনি বলেন, বাংলা ছবির দর্শক যে এখনও ফুরিয়ে যায়নি সেটা আবারও প্রমাণ হলো। এভাবে দর্শকদের ভালো ছবি উপহার দিতে পারলে তারা অবশ্যই সিনেমা হলে নিয়মিত আসবেন। তাই এখন ভালো ছবি বানানোর কোনো বিকল্প নেই।
বগুড়ার বিখ্যাত সোনিয়া হলে চলছে শাকিব খানের ‘গলুই’। হলটির দায়িত্বে থাকা সাজেদ ইসলাম রানা জানান, পরিবার নিয়ে মানুষ সিনেমা হলে আসছে। যেটা আগে দেখাই যেত না। এ কারণে খুব ভালো ব্যবসা হচ্ছে।
২০১৯ সালের ঈদে সুপারস্টার শাকিব খানের পাসওয়ার্ড দেখতে মানুষের ঢল নেমেছিল। পরে দুটি বছর করোনায় সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় দুই শ’র মতো সিনেমা হল এই ঈদে চালু আছে।
ঈদের গলুই, শান, বিদ্রোহী তিনটি ছবি দিয়ে আবারও মানুষ হলমুখি হয়েছে বলে মনে করেন প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল। তিনি বলেন, মানুষ হলে আসা শুরু করেছে। এখন পরিচালক ও প্রযোজকদের উচিত ভালো ছবি বানানো অব্যাহত রাখা।
ঈদের মধ্যে গলুই, শান ও বিদ্রোহী তিনটি ছবি মানুষ দেখছে উল্লেখ করে প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকায় শান এর দর্শক বেশি। তার কারণ ঢাকায় ভালো ভালো হলগুলো শান পেয়েছে। আবার গ্রামগঞ্জের মানুষ সিঙ্গেল স্ক্রিনে গলুই ও বিদ্রোহী বেশি দেখছে। তবে তিনটি ছবিই যে মানুষ দেখছে এটাই বিশাল ব্যাপার৷
প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি আরো বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষে ছবিগুলোর ব্যবসায়িক হিসেব বোঝা যাবে। এর আগে চূড়ান্ত তথ্য আসবে না। সবমিলিয়ে এবারের ঈদে আমরা দেশের সিনেমা হল মালিকরা খুবই সন্তুষ্ট।